‘প্রয়াস’- এটি শুধু একটি নামই নয়, এটি একটি ভালোবাসার প্রতিষ্ঠান এবং এর সাথে মনের একটা সেতুবন্ধন তৈরি হয়ে গেছে। ১৯৯৫ সাল থেকেই প্রয়াস মানবিক উন্নয়ন সোসাইটির সাথে সামান্য হলেও জড়িত রয়েছি।
হেড অফিসের নিচতলায় বারান্দা লাগোয়া সেই ছোট্ট ঘর দিয়ে কার্যক্রম বিস্তারে এর যাত্রা শুরু হয়েছিল। আমার মনে আছে, সেখানে একটা ছোট টেবিল আর চার/পাঁচটা চেয়ার- এই তো আসবাবপত্র। আর সেখানে বিভিন্ন কর্মসূচির রেজিস্ট্রার, বই-খাতাপত্র, সেগুলোতে কখনো নাম-ঠিকানা বা তথ্য-উপাত্ত লিখতাম। মাঝে মাঝে ফিল্ডে যেতাম, যেহেতু নির্বাহী পরিচালক মো. হাসিব হোসেন আমার স্বামী, তাই উনার সাথেই আমি যেতাম।
সাইকেল চালিয়ে উনি ফিল্ডে যেতেন। তবে উনার বাবার অর্থাৎ আমার শ্বশুরের একটা ২০ বছরের পুরানো মোটরসাইকেল ছিল, সেই বাইকটা যেদিন পেতেন, কখনো কখনো সে বাইকে আমাকেও সাথে নিয়ে গেছেন। এরপর দেলবাড়ী ও গনসাপাড়া সাঁওতাল ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর এলাকাগুলোতে প্রশিকার আর্থিক সহায়তায় বয়স্ক এবং ছোট ছেলেমেয়েদের স্কুল পরিচালনার কাজ পেয়েছিল প্রয়াস, সেই স্কুল পরিদর্শনে আমিও যেতাম। বয়স্কদের স্কুল হতো রাতের বেলাতে। তাদের সাথে আত্মিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল, যা এখনো রয়ে গেছে আমাদের সাথে।
দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে আজকের এই অবস্থানে প্রয়াস। এখন যারা এখানে চাকরিতে যোগদান করছে, তারা ভাবতেই পারবে না প্রয়াস কি অবস্থার মধ্য দিয়ে আজকের এ অবস্থানে এসেছে। নির্বাহী পরিচালকের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল প্রয়াস। সাথে সজল, হক ভাই এরকম অনেকের নাম আমার ঠিক এখন মনে নেই। তাদের অনেক ত্যাগ রয়েছে এ প্রতিষ্ঠানের জন্য।
আজকে যখন এর অনেকগুলো কর্মসূচি ও শাখা দেখি, তখন খুব ভালো লাগে। কোথাও প্রশিক্ষণে গেলে প্রশিক্ষকরা যখন প্রশিক্ষণ দিতেন, তখনই মনে মনে ভাবতাম যে আমাদের প্রয়াস কবে এমন হবে, এরকম প্রশিক্ষণ দেবে। এখন তো শুধু হেড অফিস নয়, প্রত্যেকটি ইউনিটে কমবেশি প্রশিক্ষণ হতেই থাকে।
আজ আর নয়। প্রয়াসের জন্মদিনে সবাইকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা। প্রয়াস এগিয়ে যাক তার আপন গতিতে, কাজের মধ্য দিয়ে সমাজকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাকÑ এই প্রত্যাশা।
আলেয়া ফেরদৌস : সহকারী পরিচালক (যোগাযোগ), প্রয়াস মানবিক উন্নয়ন সোসাইটি